বাংলা সিরিয়াল

পর্দায় তার উপস্থিতি মানে শয়তানি! অথচ ভালো অভিনয় দেখার আশায় আজ সেই সংঘমিত্রাকেই মিস করেন দর্শক!

খল চরিত্র অভিনয় করবার ক্ষেত্রে সংঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প আজও খুঁজে পায় নি টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। রাজলক্ষ্মী দেবী , গীতাদে,রেনুকা রায়ে পরে সংঘমিত্রার অভিনয় বাঙালি দর্শককে নতুন করে ভাবাতে শিখিয়েছে। সংঘমিত্রার অভিনয়ের মধ্যে এমনই একটা ব্যাপার ছিল যে তার উপস্থিতি একটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করতো।

তাঁর অভিনয় প্রতিভা এতটাই জীবন্ত হয়ে উঠেছিলো যে পর্দায় তিনি উপস্থিত হলেই দর্শক বলতেন, এই রে চলে এসেছে আবার শয়তানি শুরু করলো বলে!

সংঘমিত্রার বিপরীতে থাকা চরিত্র গুলির চোখের জল দেখে যেমন দর্শক কেঁদে ভাসাতেন, তেমনি ভিলেন চরিত্রে সংঘমিত্রার দাপট দেখে চরিত্রটিকে সত্যি সত্যি ভেবে নিয়ে তাকে রেগে দু কথা বলতেও ছাড়তেন না দর্শক আর এখানে সংঘমিত্রার কৃতিত্ব। নিজ অভিনয় ধারার সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন : রতনে রতন চেনে!রাইয়ের উপযুক্ত সঙ্গী অনির্বাণ।দুই অবিশ্বাসী।ঠিকই আছে!

কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী থেকে শুরু করে মেজ বৌ, ছোট বৌ, চৌধুরী পরিবার, বাজি,সাথী, শুভদৃষ্টি ইত্যাদি একাধিক ধারার ছবিতে অভিনয় করে তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন নিজের সম্প্রতিভ ক্ষমতাকে। তাই তার মৃত্যুর পর বছর কুড়ি কেটে গেলেও আজও দর্শক তার স্মৃতিচারণা করেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পেজে এই অভিনেত্রীর অভিনয় দক্ষতার প্রশংসা করে দীর্ঘ একটি পোস্ট করা হয় যেখানে লেখা হয় যে ,“অভিনয়ের পাশাপাশি একজন ভালো নৃত্যশিল্পী ছিলেন সংঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় । কেরিয়ারের শুরুতে পজেটিভ চরিত্রে অভিনয় করলেও খলচরিত্রই তাঁকে পৌঁছিয়ে দিয়েছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।”গ্রামের মেয়েরা অনেক কিছু জানে। দেখো,সপ্তমী হয় তো তুকতাক করে আমার ভাইকে কিছু খাইয়ে দিয়েছে…”।

ছবিতে এমনই সব কটু কথা, কুকথা, ষড়যন্ত্রের ডায়লগ দিয়ে সংসারে ভাঙন ধরাতেন অভিনেত্রী সংঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংঘমিত্রা রয়েছেন অথচ সেই পরিবারে ভাঙন নেই, তা অবিশ্বাস্য়। ছবিতে তাঁর উপস্থিতি ঘটলেই গৃহিনীরা বলে উঠতো, এবার শুরু হবে শয়তানি।”

আরও পড়ুন : নীলু তো আর ঐ সময় কচি খুকি ছিলোনা,তাইনা! সে জেনে বুঝেই বিয়েটা করছে!নীলুর এত বড় ষড়যন্ত্র করা উচিত হয় নি!

প্রায় তিন দশক ধরে ৩০০-রও বেশি ছবিতে কাজ করেছেন অভিনেত্রী, দর্শক তাকে নেগেটিভ রোলে দেখতেই বেশি পছন্দ করতেন। অভিনয়কে তিনি এতটাই ভালবাসতেন যে ২০০০ সালে ভয়ংকর গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনি ক্ষত বিক্ষত হয়ে যাওয়ার পর যখন সবাই ধরেই নিয়েছেন অভিনেত্রী আর কখনো পর্দায় ফিরবেন না, তখন নিজের অদম্য প্রাণশক্তির জোরে এই দুর্ঘটনার পরে মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই হরনাথ চক্রবর্তীর সাথী ছবিতে কামব্যাক করেন অভিনেত্রী।

এরপর ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হন তিনি আর নিজের স্টারডাম বজায় রাখবার জন্য নিজের ছেলেকে বলেছিলেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কথাটা গোপন রাখতে। এই সময় তিনি অন্তরালে চলে যান আর প্রায় ৫২ দিনের লড়াই শেষে ২০১৬ সালের ২৭ শে অক্টোবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

Related Articles